জ্বালানী তেরের দাম আর্ন্তজাতিক বাজারে প্রায় অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে কিন্তু আমাদের দেশে তা আগের দামের দ্বিগুনেরও বেশি। এই অন্যায় বিচার আমরা এক প্রকার মেনেই নিয়েছি কিন্তু এতো মুনাফার পরেও যদি তেলের মধ্যে ভেজাল দেয়ে, পানি মিশিয়ে রাখে, ময়লা করে রাখে কিংবা ওজনে কম দেয়ে তখন কেমনটা লাগে বলেন ???
একটা গাড়ি বা মটর বাইক কিনতে সরকারকে যে পরিমান টেক্স দিতে হয়, তা সেই গাড়ির মূল দামের থেকেও বেশি। কিন্তু বিনিময়ে আমরা রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ছাড়া আর কি সার্ভিসটা পেয়ে থাকি ???
তার পরেও এই ভেবে মনকে বুঝাই। আল্লাহতো আমাদের বস্তি বা ফুতপাতে জন্মগ্রহন করান নাই বা তার কৃপায় এখন সেই পর্যায়ে নেমে যাই নাই। সেই বস্তি বাসি আর ফুতপাতের মানুষগুলো স্বাভাবিক মৌসুমেই তাদের জীবন যেভাবে পার করে তা আমাদের পক্ষে অনুধাব করা কখনওই সম্ভব না, আর শীত কিংবা বর্ষায় তাদের দুর্ভোগের বর্ননা পৃথিবীর কোনো লেখকের পক্ষেই লেখা সম্ভব না। কিন্তু হায়, আমরা হয়তো জানিই না, তাদের সর্ম্পূন দেখভাল করার দ্বায়িত্ব রাষ্ট্রের ছিল আমাদের সংবিধানে মৌলিক অধিকারের মধ্যেই তা উল্লেখ্য করা আছে।
তবুও দেখুন, স্বাধীনতার ৪৪ বছর পার হয়ে গেলোও সংবিধানের সেই মৌলিক অধিকারগুরো আমরা আজও বাস্তবায়ন করতে পারি নাই, সংবিধান কতৃক রাষ্ট্রের সম্পদের সুসম বন্টন ব্যবস্থা চালু করতে পারি নাই, একটা জনকল্যানকর জ্বালানী নীতি গড়ে তুলতে পারি নাই কিন্তু এই সব কিছুই সংবিধানে খুব স্পষ্ট ভাবে লিখা আছে। কিন্তু প্রতিনিয়তই শাষক গুষ্টি সংবিধান রক্ষার নামে ক্ষমতা আক্রে ধরে বসে থাকার চেষ্টা করে চলছে, অথচ সংবিধানে মানুষের জন্য কল্যানকর যা কিছু আছে তার সবটুকুকেই উপেক্ষা করা হচ্ছে অনবরত।
লেখাটার শুরু করেছিলাম “কি করবেন যখন দ্বিগুন দামের তেল কেনার পরেও যদি তাতে ভেজাল থাকে, ওজনে কম দেওয়া হয় ?” এই প্রশ্ন দিয়ে। এর উত্তরে হয়তো বলতে হয়, আপাতদৃষ্টিতে কিছুই করার নাই। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি চিন্তায় অবশ্যই কিছু করার আছে,
প্রথমত, বিশ্বাস রাখতে হবে এই সমস্যার সমাধান হবেই।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রকর্তিক আমাদের প্রাপ্য আধিকার গুলো বুঝতে হবে।
তৃতীয়ত, শুধু আবেগে চেতনার মিলের দিকে না তাকিয়ে, বাস্তবিক ভাবে সিন্ধান্ত নেওয়া শিখতে হবে।
সবশেষে, কোনো মহাপুরূষ এসে সব সমস্যার সমাধান করে দিয়ে যাবে এই ভেবে বসে না থেকে নিজ থেকে প্রতিবাদ শুরু করতে হবে, সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে, প্রয়োজনে রাজনৈতিক ভাবে। আর তা যদি সম্ভব না হয়, আন্তত এমন কাউকে সর্মথন দিয়ে যান, যার যাথে হয়তো চেতানর মিল কম আছে কিন্তু সে নীতি ও নৈতিকার প্রতি অবিচল এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ কারি। এমন মানুষ বা সংঘটন পাওয়া খুব কষ্টকর নয়, আমাদের আসেপাশেই হয়তো তারা আছে, আয়তনে ছোটো বা ক্ষমতায় দুর্বল কিন্তু মেধা ও নীতি নৈতিকাতায় সকল অপশক্তিগুলে থেকে অনেক উপরে। এদের সাথে একাত্ব হোন, প্রতিবাদ করুন, নিজের ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। সর্বপুরি একটা ন্যায় ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলুন। তখন হয়তো আর আপনাকে এইসব প্রশ্নের উত্তরের জন্য আক্ষেপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না।