একথা সত্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফী গুলো অনেকক্ষেত্রে অযাচিত ভাবে তৈরিকৃত। কোর্স অনুপাতে তারা যে টিউশন ফী নির্ধারিত করে থাকে, অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষার্তীরা সেই অনুপাতে সার্ভিস পেয়ে থাকে না। আর তাই, সরকারের এখানে উচিত ছিল এই অনৈক্য গুলো মনিটর করা ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। দেশে গুড গার্ভানেন্স চালু থাকলে, সরকার তাই করতো। কিন্তু না আমাদের দেশে আবার সব সময় “লুটেরা সরকাররা” দেশ চালায় আর তাই এক্ষেত্রে যা হবার তাই হয়েছে।
“লুটেরা সরকার” লক্ষ করলো, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের প্রতুলতার সুযোগ নিয়ে যাচ্ছে-তাই ভাবে কোর্স ফী নিধারন করে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে রমমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেছে। সরকার বিষয়টা দেখে প্রথমে খুব ক্ষুব্ধ হলো মনে মনে বলতে লাগলো “কেউ খাবে তো কেউ খাবে না, তা হবে না তা হবেনা” কিন্তু পরক্ষনেই সে আবার আনন্দে আত্তহারা হয়ে উঠলো কারণ, দেশের যত বড় বড় আন্ডার ওর্য়াল্ড ব্যবসায়ি আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে কোউ তো তাদের চাঁদা না দিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে না, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই বা কেনো বাদ যাবে , যেই চিন্তা সেই কাজ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তো আর আন্ডার ওর্য়াল্ডের চুক্তি চলে না, তাই এখানে একটু সুশিল সেজে কাজটা করতে হয়, এজন্য “সরকারি চাঁদা” ভদ্র সমাজে যাকে Tax বলে ডাকা হয় তা বসিয়ে দেওয়া হলো।
লুটেরায় লুটেরায় আপনা ভাই। এক্ষেত্রেও তাই ঘটলো। সরকারের এই অন্যায় প্রস্তাবকে স্বানন্দে গ্রহন করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের টিউশন ফীর সাথে ভ্যাট যুক্ত করে দিলো, যা তারা স্টুডেন্টদের কাছ থেকেই কেটে নিতে পারবে এবং এতে তো তাদের বরং কোনো ক্ষতি হবেই না আরও তারা লাভবান হবে দুই দিক দিয়ে। ১.বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভেবে দেখলো, এই টেক্স পরিশোধের মাধ্যেমে তারা সরকার থেকে একপ্রকার সীকৃতি পাচ্ছে অযৌক্তিক ভাবে কোর্স ফী নির্ধারনের, যেমনি কালো টাকার মালিকরা টেক্স প্রদান করে তার সম্পদকে সাদা করে থাকে এবং ২.সরকার কে টেক্স দেওয়ার মধ্যে সব সময় একটা সুভংকরের ফাকি থাকে, টেক্স যত বেশি নির্ধারিত হয়, ফাঁকিটা ততো হারেই দেওয়া যায়, তা মনে হয় আর বুঝিয়ে বলতে হবে না। তো দুই পক্ষই এতে বেজায় খুশি ছিল কিন্তু মাঝ পথে কাটা হয়ে দ্বাড়ালো শিক্ষার্থীরা তাদের এখন আবার জামাত-বিএনপির লোক নামে ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা চলছে।
যাইহোক, আর কিছু বলার নাই, যেমন অবৈধ সরকার তেমনই তার কার্যকলাপও তো অবৈধই হবে। এখন দেখা যাক কার শক্তি বেশি শিক্ষার্থীদের না, মালের সরকারের।
ওহ আর একটা কথা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর আজকের আন্দোলন যা দেখালো তাতে মনে হচ্ছে তারা অনেক ক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কেও ছাড়িয়ে গেছে। ঢাকায় সরকারি বিশ্বাবিদ্যালয়গুলতে গোলোযোগ সৃষ্টি হলে ঐ নির্দিষ্ট কিছু জায়গা শাহবাদ আর সাদরঘাট এর বাহিরে কোথাও প্রভাব পরে না। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাব সারা ঢাকা জুড়েই। আবার তাদের আরও একটা ভয়ঙ্কর দিক হলো এদের কোনো নেতৃত্ব নেই, আর নেতৃত্বহীন জনতা ভয়ঙ্কর আকার ধারন করতে পারে আর তাই সরকার আজ সারা দিনেও বুঝতে উঠতে পারি নি তাদের বিরূদ্ধে পুলিশি একশনে যাবে কিনা, তবে একটা সুষ্ঠ নেতৃত্ব থাকলে এদের যেকোনো সামাজিক আন্দোলন ইফেক্টিভ হতো।
শেষ কথায় শুধু এইটুকুই বলবো, এই আন্দোলনটা আমার দেখা ও বুঝার মধ্যে এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র বড় ছাত্র আন্দোলন, যার দাবীগুলো সরাসরি ভাবে ছাত্রছাত্রীদের অধিকারের সার্থে সর্ম্পকযুক্ত। ছাত্রদের অধিকারের দাবী নিয়ে এমন বড় আন্দোলন সম্ভবত পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম ঘটলো।
#NoVATonEducation